সাখাওয়াত টিপু শিবিরে ভাঙ্গনের সুর
মডেল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ব্যবসায়ী নেতা মাসুদুজ্জামান মাসুদে যেন নারায়ণগঞ্জ প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। ক্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে নির্বাচনের মাঠ নতুন দিকে মোড় নিতে যাচ্ছে। সবশেষ কেন্দ্রীয় অফিসে গিয়ে ব্যবসায়ী মাসুদুজ্জামান মাসুদের বিএনপিতে যোগদান নারায়ণগঞ্জ বিএনপির রাজনীতিতে আরও অনেক বেশি আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এ অবস্থায় নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান ও সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ বলয় ছেড়ে মাসুদ বলয়ে অনেকেই যোগদান করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে খবর চাউর হয়েছে এবং বেজে উঠছে ভাঙ্গনের সুর।আরএমন খবরে সাখাওয়াত ও টিপুর কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে বলে মনে করছেন রাজনীতিক নেটিজেনরা।
জানাগেছে, তাদের অনুসারীরা হতাশ হয়ে পড়েছেন। কেউ কেউ আবার মাসুদুজ্জামান মাসুদের বলয়ে ফেরার চেষ্টায় রয়েছেন। তাদের রাজনীতিতে ভাটা পড়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। সেই সাথে নারায়ণগঞ্জ বিএনপির রাজনীতিতেও নতুন করে আলোচনা সৃষ্টিকরেছে।
সূত্র বলছে, বিগত প্রায় ১৬ বছর ধরেই রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় ছিলো আওয়ামী লীগ। আর এই ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় সারাদেশের মতো নারায়ণগঞ্জেও বিএনপি সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা বিভিন্নভাবে অত্যাচার নির্যাতন নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে তারা প্রকাশ্যে সভা সমাবেশ করতে পারতেন না।এরই মধ্যে গত বছরের ৫ আগস্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। আর আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকেই নারায়ণগঞ্জে সকল রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা বিভিন্নভাবে নিজেদের জানান দিতে থাকেন। তাদের সম্ভাব্য প্রার্থীরা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিতে থাকেন। আর এই প্রস্তুতিতে মাসুদুজ্জামানও হাজির হন। সেই সাথে বিভিন্ন কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে নিজেকে জানান দিতে থাকেন।
এদিকে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। আর এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে বিএনপির ব্যস্ততা শুরু হয়ে গেছে। তারই ধারাবাহিকতায় মডেল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদুজ্জামান আরও বেশি সক্রিয় হয়ে উঠেন।গত ১৪ জুন মেজবান তথা ঈদ পুনর্মিলনীর আয়োজন করেছেন মাসুদ। সেখানে বিএনপির নেতাকর্মীরা সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন। সেই সাথে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মাসুদুজ্জামান তার নির্বাচনের বাসনা জানান। আর তার সমর্থনে বিএনপির একটি বিশাল অংশ মাঠে সক্রিয় রয়েছে। যারা মাসুদুজ্জামানের মনোনয়ন প্রাপ্তিতে সমর্থন যুগিয়ে যাচ্ছেন। সেই সাথে বিভিন্ন কর্মসূচিতে সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
তবে মাসুদুজ্জামানের এই সক্রিয়তায় কিছুটা বিপাকে পড়ে যান দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত থাকা বিএনপির প্রবীণ নেতারা। মাসুদুজ্জামানের কারণে তাদের দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন মনোনয়ন বঞ্চিত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান ও সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু মাসুদুজ্জামান মাসুদের বিপরীতে অবস্থান করে আসছিলেন।বিভিন্ন সভা সমাবেশের মধ্য দিয়ে তাদের বিরোধী অবস্থান জানান দিয়ে আসছিলেন। সাখাওয়াত হোসেন খান ও আবু আল ইউসুফ খান টিপু যেন মাসুদুজ্জামান মাসুদকে কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছিলেন না। কিন্তু তাদের বিরোধীতাকে কেন্দ্রীয় বিএনপি কোনো রকমের গুরুত্বই প্রদান করেনি। তাদের মতামতের উপেক্ষা করেই মাসুদুজ্জামান মাসুদকে কেন্দ্ৰীয় অফিসে নিয়ে আয়োজনের মধ্য দিয়ে সদস্যপদ দেয়া হয়।

আপনার মতামত লিখুন